
কর্পোরেট ক্যারিয়ার শুরুটা হয় ইন্টার্নশিপ দিয়ে। ইন্টার্নশিপই পারে একজনের ক্যারিয়ার বদলে দিতে পারে শুরুতেই। সাধারণত এখন সকল ভার্সিটিই তাদের কোর্স প্লান এ ইন্টার্নশিপকে রেখেছে। ভার্সিটির শেষের দিকের সেমিস্টারে স্টুডেন্টরা এখন ইন্টারশিপ করছে। কিন্তু অনেকেই ইন্টারশিপকে সেভাবে গুরুত্ত দেই না। কোনোমতে ইন্টারশিপ শেষ করে ভার্সিটি থেকে পাস করে বের হতে পারলেই যেনো বাঁচে তারা! এ সকল স্টুডেন্টরা হয়ত তখন বুঝতে পারেনা, তারা ঠিক কত বড়ো ক্ষতি করছে নিজেদের ক্যারিয়ারের। আজকে আলোচনা করবো ইন্টারশিপ ক্যারিয়ার গড়তে কত বড় ভুমিকা রাখে।
স্কিল ডেভেলপমেন্ট ও নানা রকম মজার টপিক নিয়ে আমরা নিয়মিত ভিডিও প্রকাশ করে থাকি Shadhin School চ্যানেল এ। |
ইন্টার্নশিপ প্রফেশনালিজম হতে সাহায্য করে
ইন্টার্নশিপ করতে গিয়ে তুমি সবার আগে শিখবে প্রফেশনালিজম। প্রফেশনালরা কিভাবে কাজ করে, কিভাবে কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডের কাজগুলো সম্পন্ন করতে হয়। সত্যিকার পরিবেশে কাজ করার একটি বাস্তব অভিজ্ঞতা হয়। এই অভিজ্ঞতাটি অত্যন্ত দরকারি। বেশিরভাগ তরুণ নতুন পরিবেশে কাজ করতে এসে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে না। আসলে পড়ালেখার পরিবেশ ছেড়ে কাজ করার জন্য সম্পূর্ণ ভিন্ন এক পরিবেশে মানিয়ে নেয়ার জন্য, সবসময়ই কারো না কারো সাহায্য প্রয়োজন। তবে এ ধরণের পরিবেশে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলে, মানিয়ে নেয়ার কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। ইন্টার্নশিপ শেষে যখন ফুল টাইমার হিসেবে কাজে যোগ দিবে, তখন সহজেই বুঝতে পারবে তোমার কোন সময় কী করা উচি, আর কী করা উচিৎ না।
আরো পড়তে পারো | জীবনে সফল হতে হলে সবার আগে যা করনীয় |
কর্মজগৎ কীরকম তা বুঝতে সহজ করে ইন্টার্নশিপ
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তরুণরা কোনো রকম পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই কর্মজগতে ঢুকে পড়ে। এই নতুন পরিবেশটি কীরকম বা এখানে কীভাবে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়, সে ব্যাপারে অনেকেরই কোনো ধারণা থাকে না। তাই শুরুতে নিজেকে ঠিকমতো মানিয়ে নিতে প্রায় সবারই কষ্ট হয়। ইন্টার্নশিপের ব্যাপারাটা এখানে একটি সমাধান হয়ে দাঁড়ায়। তুমি যেই কর্মক্ষেত্রে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চাও, তার ব্যাপারে আগে থেকে ধারণা থাকলে তুমি সহজেই বুঝতে পারবে সেখানকার পরিবেশ কীরকম বা কীভাবে সেখানে মানিয়ে চলতে হয়। আবার যেখানে কাজ করতে যাচ্ছো, সেখানে তোমার থেকে কী আশা করা হচ্ছে তা বুঝতেও সুবিধা হয় অনেক।
আরো পড়তে পারো | মোটিভেশনের অভাব? |
ইন্টার্নশিপ নেটওয়ার্ক তৈরিতে সাহায্য করে
কোনো জায়গায় ইন্টার্নশিপে যুক্ত হলে সেখানে তোমার সহকর্মীদের সাথে এবং ইন্টার্নশিপের দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের সাথে বেশ ভালো একটি সম্পর্ক তৈরি হয়। ভালো সম্পর্কটি যে এমনিতেই তৈরি হয়ে যায় তা না, সম্পর্কটি তৈরি করে নিতে হয়। কারণ ইন্টার্নশিপের সময় তাদের সাথে যেই সম্পর্কটি তৈরি হয়েছে, তা পরবর্তীতে যেকোনো কাজে লাগতে পারে। ইন্টার্নশিপ শেষ হয়ে যাওয়া মানে কিন্তু সম্পর্ক শেষ হয়ে যাওয়া বোঝায় না। পরবর্তীতে সিভি তৈরির সময় কিংবা অন্য কোনো কাজে রেফারেন্সের সাহায্য লাগলে এখান থেকে অবশ্যই সাহায্য পাবে।
আরো পড়তে পারো | ক্যারিয়ার শুরুতে ব্যর্থ ছিলেন সফল যে ৪ উদ্যোক্তা |
রিক্রুট হবার সুযোগ থাকে ইন্টার্নশিপ থেকেই
ইন্টার্নশিপে যদি আশানুরূপ ফল দেখাতে পারো, তাহলে অনেক সময় তোমাকে পার্ট টাইম কিংবা ফুল টাইম কাজের জন্য রিক্রুট করা হতে পারে। এটা নির্ভর করে তুমি কাজের প্রতি কতটুকু আগ্রহ দেখাচ্ছো তার উপর এবং ইন্টার্নশিপ শেষে যদি রিক্রুট হবার সুযোগ নাও থাকে কিংবা পড়ালেখার জন্য যদি কাজে যোগ দিতে না পারো, তখন পরবর্তীতে সরাসরি কাজে জন্য আবেদন করলে তোমাকে অগ্রাধিকার দেয়া হতে পারে। কারণ তারা তো জানে, তুমি তাদের সাথে আগে কাজ করেছো। তাদের কাজের ধরণ তুমি বোঝো। একারণে ইন্টার্নশিপ ক্যারিয়ার গড়তে অনেক গুরুত্তপূর্ণ ভুমিকা রাখে।
আরো পড়তে পারো | ফেইল মানেই কি সব শেষ? |
যখন ইন্টার্নশিপ বাছাই করবে, তখন খেয়াল রাখা উচিৎ তুমি কোন দিকে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে চাও। তোমার ক্যারিয়ারে লক্ষ্য একটা। কিন্তু তুমি এমন এক ইন্টার্নশিপ বাঁছাই করলে যা তোমার ক্যারিয়ারের সাথে কোনোভাবেই যায় না। ধরো তুমি চাচ্ছো বড় হয়ে একজন ব্যাংকার হবে। কিন্তু তুমি ইন্টার্নশিপ করলে হোটেল ম্যানেজমেন্টের উপর। অথবা ধরো তুমি চাচ্ছো লেখালেখিকে নিজের পেশা হিসেবে বেঁছে নিবে। কিন্তু তুমি ইন্টার্নশিপ করলে এমন কিছুর উপর যা তোমার লেখালেখির দক্ষতার সাথে যায় না। এরকম ভুল করা যাবে না। কোথায় কোন সময় কী রকম ইন্টার্নশিপের অফার করছে তা খোঁজ রাখা উচিৎ।
আর সর্বশেষ গুরত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো, ইন্টার্নশিপ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কখনও অর্থলাভের কথা চিন্তা করা যাবে না। ইন্টার্নশিপ হলো এক প্রকার ট্রেইনিং। এখানে কাজ করার বিনিময়ে তুমি তোমার ক্যারিয়ার গড়ার ব্যাপারে অভিজ্ঞতা লাভ করছো। যদি তুমি চিন্তা করো যে, “এখানে কাজ করে অনেক কষ্ট করবে, কিন্তু কোনো টাকা না পেলে লাভ কী!” তাহলে তুমি মস্ত বড় ভুল করছো। অর্থ উপার্জনের পথ সুগম করার জন্যই হলো ইন্টার্নশিপের সুবিধা। এখান থেকে যেই অভিজ্ঞতা লাভ করবে, তাই কাজে লাগিয়ে তুমি ভবিষ্যতে অর্থ উপার্জন করবে। তাই অর্থ উপার্জনের বিষয়টি যেন কখনও ইন্টার্নশিপ বাছাইয়ের অন্তরায় হয়ে না দাঁড়ায়।
references – www.blog.sunny.edu, www.10minuteschool.com & www.careerup.com
আরো পড়তে পারো |
ই-মেইল ব্যবহার এর ৬টি শিস্টচার |
দ্রুত টাইপিং শিখার ৫টি গেম এবং অ্যাপ্লিকেশন |
সঠিক সময়ে সকল কাজ শেষ করার সহজ উপায় |
৫টি ইউটিউব চ্যানেল যা আমাদের স্মার্ট করে তুলবে |